Chronic Kidney Disease: অনেক ক্ষেত্রেই, ক্রনিক কিডনি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কারণ, আমাদের কিডনি শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কার্যক্ষমতা রাখে। ফলে, কিডনির কার্যকারিতা কিছুটা কমে গেলেও তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা বা প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ ধরা পড়ে। যাদের কিডনি রোগ ধরা পড়ে, তাদের নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
যখন ক্রনিক কিডনি রোগ অগ্রসর হয় এবং কিডনির কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়, তখন কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক নিউজ মেডিকেল লাইফ সাইন্স জার্নাল কি বলছে ক্রনিক কিডনি রোগের লক্ষণগুলির বিষয়ে:
1. প্রস্রাবের পরিবর্তন
কিডনি আমাদের শরীরে রক্ত পরিশোধন করে এবং বিপাকীয় বর্জ্য নিষ্কাশন করে। প্রস্রাব তৈরি করা হলো কিডনির প্রধান কাজ। যখন কিডনি কার্যক্ষমভাবে কাজ করে না, তখন প্রস্রাবের পরিমাণ এবং রঙে পরিবর্তন আসতে পারে। ক্রনিক কিডনি রোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলে, প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে, বিশেষ করে রাতের বেলায়। প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া, ব্যথা, বা চাপ অনুভূত হতে পারে। এছাড়া,প্রস্রাব অন্যরকম দেখাতে পারে – যেমন – ফেনা ফেনা, ঘোলাটে বা লালচে। এটা হয় কারণ প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন, রক্ত, বা অন্য কিছু বের হয়ে আসে।
2. পেরিফেরাল ইডিমা
যখন কিডনি সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন শরীরে থাকা অতিরিক্ত তরল পদার্থ ক্রমশ জমতে থাকে। এর ফলে, শরীরের বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে হাত-পায়ে, অতিরিক্ত তরল জমে যায়। এই অবস্থাকে বলা হয় ‘পেরিফেরাল ইডিমা’। পেরিফেরাল ইডিমার কারণে আপনার দৈনন্দিন জীবনে অসুবিধা হতে পারে – জুতা পরা, হাঁটা, দৌড়ানো, বা এমনকি সিঁড়ি ভাঙাও কঠিন হতে পারে।
3. ক্লান্তি
কিডনি একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন, Erythropoietin (EPO) তৈরি করে, যা লোহিত রক্ত কণিকা (RBC) উৎপাদনে সহায়তা করে। RBC শরীরে অক্সিজেন বহন করে। যখন একজন ব্যক্তি ক্রনিক কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়, তখন এটি পর্যাপ্ত EPO উৎপাদন করতে পারে না, যার ফলে রক্তাল্পতা দেখা দেয়। রক্তাল্পতার ফলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়, যার ফলে ক্লান্তি, দুর্বলতা, এবং মাথা ঘোরা অনুভূত হয়।
4. চুলকানি
কিডনি রক্ত থেকে বিপাকীয় বর্জ্য পদার্থ এবং তরল অপসারণ করে। যখন কিডনি সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন এই বর্জ্য পদার্থ রক্তে জমা হতে থাকে। এই বর্জ্য পদার্থগুলি ত্বকের স্নায়ুগুলিকে বিরক্ত করে, যার ফলে চুলকানি হয়। এটি বিশেষত রাতে বা শীতকালে আরও খারাপ হতে পারে।
5. ক্ষুধামান্দ্য ও ওজন পরিবর্তন
ক্রনিক কিডনি রোগের ক্ষেত্রে, ক্ষুধামান্দ্য এবং ওজন হ্রাস একটি সাধারণ সমস্যা। এটি মূলত হয় রক্তে বর্জ্য পদার্থ জমে থাকার কারণে। এছাড়া, মুখে ধাতব স্বাদ এবং দুর্গন্ধ হতে পারে। কখনও কখনও বমি বমি ভাব হতে পারে, যা ওজন কমার একটি কারণ হতে পারে।
6. শ্বাসকষ্ট
ক্রনিক কিডনি রোগে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি দেখা দিতে পারে। এটি হতে পারে ফুসফুসে তরল জমে যাওয়া অথবা রক্তের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ না হওয়ার জন্য।
7. ব্যথা
সিকেডিতে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী তাদের কিডনির কাছাকাছি কোন ব্যথা অনুভব করেন না। তবে, কিছু রোগীর, বিশেষ করে যাদের পলিসিস্টিক কিডনি রোগ অথবা কিডনিতে পাথরের মতো অন্যান্য রোগ রয়েছে, তাদের ব্যথা হতে পারে।
লাইফস্টাইল সংক্রান্ত এরকম আরও খবর পড়তে চোখ রাখুন সংবাদ ভূমি ইন্ডিয়া ওয়েবসাইটে।