PCOS Symptoms: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) হল একটি সাধারণ হরমোনজনিত ব্যাধি যা প্রজননে সক্ষম মহিলাদের প্রভাবিত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় 8 থেকে 13 শতাংশ মহিলা এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। তবে, 70 শতাংশ ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় হয় না, যা এই ব্যাধিকে আরও জটিল করে তোলে। পিসিওএসের কিছু লক্ষণ হল: অনিয়মিত ঋতুস্রাব, মুখে বা শরীরের অন্যান্য অংশে অতিরিক্ত লোমবৃদ্ধি, অ্যাকনে, ওজন বৃদ্ধি, ইত্যাদি।
পিসিওএস থাকা মহিলাদের ওজন কমানোর সময়ে কয়েকটি লক্ষণীয় বিষয় দেখা দিতে পারে, যেমন:
1. পেটের চর্বি
পিসিওএস-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হল পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমা যাওয়া। এই চর্বি, যাকে অনেকসময় ‘পিসিওএস বেলি’ বলা হয়, সাধারণত কোমরের এবং পেটের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির চারপাশে জমা হয়। এই অতিরিক্ত চর্বি হরমোন অসামঞ্জস্যতার ফলে তৈরি হয়। সুস্থ মহিলাদের তুলনায়, যেখানে চর্বি শরীরের নিম্ন অংশে, যেমন নিতম্ব, উরু, এবং স্তনে জমা হয়, পিসিওএস আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি পেটে জমা হয়। এই পেটের চর্বি কেবল অস্বাভাবিক চেহারাই নয়, বরং স্বাস্থ্যের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। এটি প্রদাহ এবং ইনসুলিন প্রতিরোধের সাথে যুক্ত, যা হৃদরোগ এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
2. মিষ্টি খাওয়ার প্রবল ইচ্ছা
পিসিওএস থাকা মহিলাদের প্রায়ই মিষ্টি বা শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ার খুব ইচ্ছা হয়। এটি ঘটে ইনসুলিন প্রতিরোধের কারণে, যা শরীরে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণকে উৎসাহিত করে। উল্লেখ্য যে, স্থূলকায় পিসিওএস আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি বেশি দেখা দেয়। দানা শস্যজাত খাবার নির্বাচন এবং পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ রক্তের শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, চিনি জাতীয় বা প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিত্যাগ করলে এই ধরনের আকর্ষণ কমে।
3. চুল পড়া
পিসিওএস-এর আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হল চুল পড়া। এটি ঘটে শরীরে অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে। এই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা চুলের ঘনত্ব হ্রাস করে, ফলে চুল পাতলা হয়ে যায় এবং সহজেই ছিঁড়ে যায়। পিসিওএস আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে প্রায়শই টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি থাকে, যা চুল পড়ার সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই চুলের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
4. অনিয়মিত ঋতুস্রাব
পিসিওএস-এর একটি প্রধান লক্ষণ হল অনিয়মিত ঋতুস্রাব। এটি ঘটে কারণ ডিম্বাশয়ের কার্যাবলিতে বিঘ্নের ফলে ওভুলেশনে বাধা সৃষ্টি হয়। তবে, মেয়েদের প্রথম ঋতুস্রাবের পরে কয়েক বছর পর্যন্ত (সাধারণত 2-3 বছর) ঋতুচক্র নিয়মিত না-ও হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে ঋতুচক্রের অনিয়মিততা সাধারণ ব্যাপার। পিসিওএসের ক্ষেত্রে, ইনসুলিন প্রতিরোধ ডিম্বাশয়ে টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে, ওভুলেশন এবং ঋতুচক্রের নিয়মিততা উভয়ই বিঘ্নিত হয়।
5. ক্লান্তি
পিসিওএস সরাসরি ক্লান্তি সৃষ্টি না করলেও, ক্লান্তিবোধের কারণ হতে পারে এমন কয়েকটি লক্ষণ ও অবস্থার সাথে জড়িত। পিসিওএসের সাথে সম্পর্কিত স্থূলতা, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মতো কারণগুলি ক্লান্তি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়াও, শরীরে শক্তির মাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী কর্টিসল এবং থাইরয়েড হরমোনের পরিবর্তন ক্লান্তিভাবের মাত্রাকে প্রভাবিত করে।
লাইফস্টাইল সংক্রান্ত এরকম আরও খবর পড়তে চোখ রাখুন সংবাদ ভূমি ইন্ডিয়া ওয়েবসাইটে।