Benefits of Amalaki in Bengali: আমলকি আমাদের দেশের একটি পরিচিত ফল। ভিটামিন সি, আয়রন, এবং ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ এই ফলটি একটি সুপারফুড। দেশের সর্বত্র সহজলভ্য এই ফলটি আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
বাজারে আজকাল অনেক খাবারকে সুপারফুড হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যা অত্যধিক দামে বিক্রি হয়। কিন্তু আমলকি তার ব্যতিক্রম। এটি সস্তা হওয়ার পাশাপাশি অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা বহন করে। বর্ষাকালে এই ফলের মরশুম আসে। আমলকি তাজা, শুকনো, বা গুঁড়ো আকারে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া, টক স্বাদ ও অসাধারণ স্বাস্থ্যগুণের জন্য এটি জুস, জ্যাম, এবং আচারেও ব্যবহৃত হয়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বর্ষাকালে কেন আপনার ডায়েটে আমলকি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত:
কাঁচা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা
1. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
আমলকি ভিটামিন সি-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে, বর্ষাকালে আমাদের চারপাশে জীবাণু বৃদ্ধি পায়, তাই এই সময় আমলকি খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
2. হজমশক্তি উন্নত করে
আমলকি হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। বর্ষাকালে অনেক সময় পেটের সমস্যা দেখা দেয়। আমলকি খেলে পেট পরিষ্কার থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং হজমশক্তি ভালো থাকে।
3. ত্বকের সুরক্ষা ও উজ্জ্বলতা
আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে এবং ফ্রি রেডিকেল-এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে। ফলে, আমলকি খেলে ত্বক উজ্জ্বল, সতেজ ও সুস্থ থাকে। বর্ষাকালে ত্বকের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ার ফলে ব্রণ ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমলকের প্রদাহ-নাশক উপাদান এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
4. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
গবেষণায় দেখা গেছে, আমলকি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে থাকা ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের গ্লুকোজের শোষণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বৃদ্ধি করে। বর্ষাকালে অনেক সময় মিষ্টি খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়, যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। নিয়মিত আমলক খেলে এই সমস্যা এড়ানো যায়।
5. চুলের জন্য আমলকির উপকারিতা
আমলকিতে ভিটামিন সি-এর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে, যা চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এবং নতুন চুলের বৃদ্ধি দ্রুত করে। ফলে, আমলকি খাওয়ায় চুল পড়া কমে এবং চুল ঘন ও দীর্ঘ হয়। বর্ষাকালের আর্দ্রতা চুলের নানা সমস্যা, যেমন চুল পড়া, খুশকি, চুল ভেঙে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। আমলকিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ-নাশক গুণাবলী এই সমস্ত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
আমলকির ক্ষতিকর দিক
আমলকি সাধারণত একটি নিরাপদ ফল, তবে কিছু ক্ষেত্রে পেটে অস্বস্তি, ডায়রিয়া, বা বমি বমি ভাব সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও, কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের সাথে এর প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। সুতরাং, আমলকি খাওয়ার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
প্রতিদিন কটা আমলকি খাওয়া উচিত
স্বাস্থ্য উপকারিতা লাভের জন্য প্রতিদিন 1-2টি আমলকি খাওয়া বাঞ্ছনীয়। বিশেষ করে, শীতকালে আমলকি খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
প্রতিদিন আমলকি খেলে কি হয়
নিয়মিত আমলকি খেলে শরীরের নানাভাবে উপকার হয়, যেমন:
- বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- রক্তে কোলেস্টেরল কমায়
- সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রণে রাখে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং
- হাড় মজবুত করে।
রাতে আমলকি খেলে কি হয়
যদিও রাতে আমলকি খাওয়া সম্ভব, তবে এটি এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। আমলকি শরীরকে ঠাণ্ডা করে, যা রাতে পেটে অস্বস্তি বা ডায়রিয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
ডিসক্লেইমার: লেখায় দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। আপনার কোনো চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
লাইফস্টাইল সংক্রান্ত এরকম আরও খবর পড়তে চোখ রাখুন সংবাদ ভূমি ইন্ডিয়া ওয়েবসাইটে।