Right Age to Start Exercise: সক্রিয় জীবনযাপন যে সুস্থতার মূল ভিত্তি, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এক গবেষণায় দেখা গেছে, মহিলাদের একটি নির্দিষ্ট বয়সের আগে নিয়মিত ব্যায়ামকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কোন বয়সের আগে নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করলে তারা শারীরিকভাবে বেশি লাভবান হবেন, আসুন জেনে নেওয়া যাক।
‘PLOS মেডিসিন’ নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুযায়ী, যে মহিলারা প্রতি সপ্তাহে 150 মিনিট শারীরিক কসরত করেন, বিশেষ করে 55 বছর বয়সের আগে যারা এই অভ্যাস শুরু করতে পেরেছেন, তাদের শারীরিক সুস্থতার মান অনেক বেশি ছিল।
গবেষকরা বলেছেন, 70 বছর বয়সে ভালো শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে হলে, 50 এর মাঝামাঝি সক্রিয় হয়ে আগের অসক্রিয়তার ‘ক্ষতিপূরণ’ করা সম্ভব। এই তথ্য জনস্বাস্থ্য উদ্যোগগুলিকে সমর্থন করে। এই গবেষণাটি স্পষ্ট করে যে, মধ্যবয়সে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন, বিশেষ করে নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে, আপনার পরবর্তী জীবনের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে।
গবেষণার ফলাফল দেখাচ্ছে যে, মধ্যবয়সে নিয়মিত ব্যায়াম করলে তা পরবর্তী জীবনে শারীরিক সুস্থতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। বেঙ্গালুরুর আথ্রেয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও মহিলা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিনুথা জি বলেন, “55 বছর বয়সে নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করলে তা শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। যে মহিলারা এই বয়সে ব্যায়াম শুরু করেন বা আগে থেকে করে আসছেন, তাদের শারীরিক সুস্থতার মান অনেক ভালো থাকে।”
তিনি আরও বলেন, “গবেষণায় 40-এর শেষের দিকে ও 50-এর শুরুর দিকের মহিলাদের অনুসরণ করা হয়েছিল। দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে 150 মিনিট ব্যায়াম করেন, তাদের শারীরিক সুস্থতার মান বেশি ছিল। আগে থেকে শুরু করলে আরও ভালো, কারণ তাতে দীর্ঘমেয়াদী অভ্যাস গড়ে ওঠে। তবে 55 বছর বয়সে শুরু করলেও তা পরে শুরু করার তুলনায় অনেক বেশি উপকার দেয়।”
150 মিনিটের সাপ্তাহিক ব্যায়ামের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ডাঃ বিনুথা কিছু বিশেষ ব্যায়ামের সুপারিশ করেছেন। এর কিছু উদাহরণ হল:
এরোবিক এক্সারসাইজ – দ্রুত হাঁটা, সমতল জায়গায় সাইকেল চালানো, এবং ডাবলস টেনিস। এই ধরনের ব্যায়াম করার সময় আপনি কথা বলতে পারবেন, কিন্তু গান গাইতে পারবেন না।
পেশির ব্যায়াম – ওজন তোলা, রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড দিয়ে ব্যায়াম, বা নিজের শরীরের ওজন ব্যবহার করে স্কোয়াট ও পুশ-আপের মতো ব্যায়াম। সপ্তাহে অন্তত দুদিন প্রধান পেশীগুলির উপর লক্ষ্য করে এই ধরনের ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।
মহিলাদের যেসব বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা বা ঝুঁকি বিবেচনা করা উচিত
ডাঃ বিনুথা বলেন, শারীরিক কসরত বাড়ানোর পরিকল্পনা করার সময় মহিলাদের নিম্নলিখিত স্বাস্থ্য সমস্যা ও ঝুঁকিগুলো বিবেচনা করা উচিত:
হৃদরোগ: যাদের হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিরাপদ ও কার্যকরী ব্যায়াম পরিকল্পনা করা উচিত।
জয়েন্টে সমস্যা বা অস্টিওপোরোসিস: যাদের আর্থ্রাইটিস বা অস্টিওপোরোসিস আছে, তাদের সাঁতার বা সাইকেল চালানোর মতো কম চাপের ব্যায়াম করা উচিত। এতে জয়েন্টে চাপ কম পড়বে, অথচ হাড় ও পেশি শক্তিশালী হবে।
ডায়াবেটিস: নিয়মিত ব্যায়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করা জরুরি।
দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা: পিঠের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা বা ফাইব্রোমায়ালজিয়ার মতো সমস্যায় সতর্কতার সাথে ব্যায়াম করতে হবে। ব্যথা না বাড়িয়েও যাতে ব্যায়ামের উপকার পাওয়া যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ডিসক্লেইমার: লেখায় দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য। আপনার কোনো চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
লাইফস্টাইল সংক্রান্ত এরকম আরও খবর পড়তে হলে চোখ রাখুন সংবাদ ভূমি ইন্ডিয়া ওয়েবসাইটে।